News Breaking
Live
wb_sunny

Breaking News

রোহিঙ্গা-আফগান উদ্বাস্তু ও বৈশ্বিক কূটনীতি

রোহিঙ্গা-আফগান উদ্বাস্তু ও বৈশ্বিক কূটনীতি

 রোহিঙ্গা-আফগান উদ্বাস্তু ও বৈশ্বিক কূটনীতি

======আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি =================>>>>>>>>>>>>
করোনা অতিমারীর চেয়েও অধিকতর ভয়ঙ্কর রূপ যেন পরিগ্রহ করছে বিশ্বের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও কূটনীতি। সাম্রাজ্যবাদী কথিত উন্নত রাষ্ট্র-সরকারের কদর্য এজেন্ডা বাস্তবায়নে সমগ্র ধরিত্রীর সার্বিক আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতি এই দুঃসময়েও প্রতিনিয়ত কঠিন থেকে কঠিনতর হতে চলেছে। সমকালীন রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে তালেবানদের আফগান দখল এবং সাধারণ আফগানদের নিরাপত্তাজনিত কারণে নানা দেশে উদ্বাস্তু হওয়ার প্রবল আকাক্সক্ষা। চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে আফগান জীবনপ্রবাহে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে নির্যাতন-নিপীড়ন-হত্যার অভিশপ্ত আতঙ্ক। ১৭ আগস্ট ২০২১ গণমাধ্যম প্রতিবেদন সূত্রে বাংলাদেশসহ পুরোবিশ্ব সম্যক অবহিত হয়েছে যে, আফগানিস্তানে রাষ্ট্র পরিচালনায় অনানুষ্ঠানিক পরিক্রমায় তালেবানরা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত। আফগান সরকারপ্রধান হেলিকপ্টারভর্তি অর্থ-যানবাহন-মূল্যবান সম্পদসহ বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। অন্যদিকে প্রাক্তন সরকার প্রধান হামিদ কারজাই শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের উদ্যোগ বাস্তবায়নে ব্যতিব্যস্ত।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কাতর আর্তনাদে দেশ ছেড়ে যেতে ইচ্ছুক আফগানদের যাত্রাপথে অন্তরায় সৃষ্টি না করার আহ্বান জানিয়ে ৬৫ দেশের পক্ষে স্বাক্ষরিত একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। দেশত্যাগী সাধারণ আফগানদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধ সরকার নাকচ করে দিয়েছে। সরকারের অবস্থানের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘রোহিঙ্গাদের নিয়ে বিরাজিত নাজুক পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিপর্যস্ত বাংলাদেশের নতুন কোন উদ্বাস্তু সঙ্কট-ঝামেলায় নিপতিত হওয়া সম্ভব নয়।’ দেশের সচেতন মহলের এটি কোনভাবে বোধগম্য নয় যে, বৈশ্বিক পরাক্রমশালী দেশ আধিপত্যবাদ-লুম্পেন বাণিজ্য সম্প্রসারণের উর্বর ক্ষেত্র ও উদ্বাস্তুদের আশ্রয়স্থল হিসেবে কেন বাংলাদেশকে বরাবরই বেছে নিচ্ছে! কথিত আর্থিক ও কারিগরি সহায়তার নামে দাতা রাষ্ট্র-সংস্থাসমূহের দেশবিধ্বংসী হিংস্র দানবরূপী এজেন্টরা নানা অপকৌশল অবলম্বন এবং ব্যক্তিস্বার্থে দেশকে বিপদগ্রস্ত করার জঘন্য চক্রান্তে লিপ্ত। এসব ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে দেশবাসী অবগত আছেন। রোহিঙ্গাদের জন্মভূমি মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে তাদের পুনর্বাসন নিশ্চিত করে বাংলাদেশ থেকে এদের প্রত্যাবর্তনের বিষয়টিতে নানা কূট-কর্মকৌশলের আড়ালে বাংলাদেশকে পর্যুদস্ত করার চক্রান্তই যেন বার বার সুস্পষ্ট হচ্ছে।
সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক রোহিঙ্গাসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশে অবস্থিত সব উদ্বাস্তুর জন্য ‘রিফিউজি পলিসি রিভিউ ফ্রেমওয়ার্ক’ নামে নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। গত জুলাই মাসে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে বিশ্বব্যাংক তাদের প্রস্তাবিত নীতিমালা সম্পর্কে মতামতের জন্য পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করে যে, ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে কোন মতামত না পেলে ওই প্রস্তাব সরকার মেনে নিয়েছে বলে তারা ধরে নেবে। উক্ত বৈশ্বিক পলিসি ফ্রেমওয়ার্কের তিনটি উদ্দেশ্য হচ্ছে- ১. উদ্বাস্তু ও হোস্ট কমিউনিটির জন্য অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি করা ২. উদ্বাস্তুরা যে দেশে অবস্থান করছে, সেই সমাজে অন্তর্ভুক্ত করে নেয়া অথবা তাদের ফেরত পাঠানো এবং ৩. দেশের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা, যাতে করে নতুন উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দেয়া সম্ভব হয়। রাখাইন রাজ্যে বসবাসকৃত আরও ৬ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে তাড়ানোর নীলনক্সা হিসেবে মিয়ানমার সামরিক জান্তা সরকার সুকৌশলে বিশ্বব্যাংক-যুক্তরাষ্ট্র তথা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মাধ্যমে দেশের ওপর শর্ত আরোপের পাঁয়তারা করছে বলে দেশবাসীর ধারণা। উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক শরণার্থী বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ দুটি আইনী দলিল হচ্ছে ১৯৫১ সালের কনভেনশন ও ১৯৬৭ সালের প্রটোকল, যা প্রণীত হয়েছিল ইউরোপের শরণার্থী বিষয়ক সমস্যা সমাধানের জন্য। ১৯৫১ সালের কনভেনশনে বলা আছে, শরণার্থীদের জোর করে ফেরত পাঠানো যাবে না। বাংলাদেশ মানবিকতা ও উদারতার অপূর্ব দৃষ্টান্ত স্থাপনে রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক না পাঠিয়ে বাংলাদেশে নিরাপদ আশ্রয় প্রদানের সকল মহৎ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
আমাদের সকলেরই কমবেশি জানা যে, মিয়ানমারে চীন-জাপানসহ ইউরোপীয়-আমেরিকানদের নানামুখী বিপুল বিনিয়োগ রয়েছে। গণহত্যায় অভিযুক্ত ও দীর্ঘ সামরিক শাসন থাকার পরও মিয়ানমারের সঙ্গে বিশ্বের প্রায় সকল ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। মূলত বিশ্বব্যাংক তাদের স্বার্থ রক্ষা করতেই বাংলাদেশের ওপর অযৌক্তিক-অন্যায়-অগ্রহণযোগ্য শর্ত চাপিয়ে দিচ্ছে, যা দেশের সার্বভৌমত্ব, অর্থনীতি ও স্থিতিশীলতায় বিরূপ প্রভাবের দৃশ্যপট তৈরি করেছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সরকার বিশ্বব্যাংকের এই প্রস্তাবকে অবান্তর বা কল্পনাপ্রসূত অভিহিত করে বাতিল করে দিয়েছে। গত ২ আগস্ট পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ‘বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সমাজে অন্তর্ভুক্ত বা রেখে দেয়ার জন্য বিশ্বব্যাংকের প্রস্তাবে ঢাকা রাজি নয়। আমাদের অগ্রাধিকার ইস্যু হচ্ছে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন, রোহিঙ্গারা তাদের বাসভূমে ফিরে যাবে। বিশ্বব্যাংক একটা রিপোর্ট তৈরি করেছে, এটা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, ১৬টি দেশের জন্য। যেসব দেশে রিফিউজি আছে, সেখানে তাদের হোস্ট কান্টিতে ইন্টিগ্রেট করার বিষয়ে। যেহেতু রোহিঙ্গা রিফিউজি নয়, আমরা এটি পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছি।’
১৬ জুন নিউইয়র্কে জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত ক্রিস্টিন এস বার্গনারের সঙ্গে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘মানবিক বিবেচনায় আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি; তবে এই সঙ্কটটির সমাধান নিহিত রয়েছে মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের ওপর, যা গত চার বছরে সম্ভব হয়নি। আমরা চাই প্রত্যাবর্তন বিষয়ে জাতিসংঘ সুস্পষ্ট একটি রোডম্যাপ তৈরি করুক।’
২০ জুন ২০২১ গণমাধ্যমে প্রকাশিত বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ জুন অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠকে রোহিঙ্গা সংক্রান্ত বিষয়ে গৃহীত রেজুলেশনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে ইতিবাচক কোন সুপারিশ না থাকায় বাংলাদেশ গভীর হতাশা ব্যক্ত করেছে। বৈঠকে উপস্থিত জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, ‘আমরা যা আশা করেছিলাম, এটি তার থেকে কম এবং সেই রেজুলেশন একটি ভুল বার্তা দেবে। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি ব্যর্থ হয়, তবে মিয়ানমার কোন ধরনের দায়বদ্ধতা অনুভব করবে না।’ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডাসহ বেশ কয়েকটি দেশ রেজুলেশনটি প্রস্তাব করে। ১১৯টি সদস্য রাষ্ট্র এর পক্ষে ভোট দিলেও বাংলাদেশ, ভারত, চীন, নেপাল, রাশিয়া ও থাইল্যান্ডসহ ৩৬টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। একমাত্র দেশ বেলারুশ এই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়। বৈঠকে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করলেও মিয়ানমারে তাদের পুনর্বাসন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি।
২৩ জুন ২০২১ গণমাধ্যম তথ্যসূত্রে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিফলিত দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে দেশবাসী বিস্তারিত অবহিত হয়েছেন। তাঁর বক্তব্যে চার বছরের অধিক সময় জোরপূর্বক বিতাড়িত ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গার কক্সবাজারে মানবিক কারণে আশ্রয়দান বর্তমানে বাংলাদেশ ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২৩ জুন নবম মস্কো আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সম্মেলনে ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘দীর্ঘসময় ধরে এখানে এত বিপুল সংখ্যক মানুষের আশ্রয়স্থল হতে পারে না। বিশ্ব সম্প্রদায়কে অনুরোধ করব, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের তাদের মাতৃভূমিতে সম্মানজনক ও শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিতে আমাদের সহায়তা করুন। একটি দেশের বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যকার সংঘাত আন্তঃদেশীয় নিরাপত্তা সমস্যার জন্ম দেয়। এখন নিরাপত্তা ধারণার মধ্যে সামরিক হুমকি, ব্যক্তির আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রয়োজন, স্বেচ্ছায় গণঅভিবাসন, পরিবেশগত নিরাপত্তা এবং অন্যান্য অপ্রচলিত নিরাপত্তা হুমকি অন্তর্ভুক্ত। এমনকি সন্ত্রাসবাদ, চরমপন্থা, বিছিন্নতাবাদ, ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্র, সাইবার অপরাধ, আঞ্চলিক কোন্দল এবং পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ ও সমস্যা দেখা দিয়েছে।’
১৩ জুলাই ২০২১ গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জনা যায়, বাংলদেশের উদ্যোগে ইসলামিক সম্মেলন সংস্থার (ওআইসি) সকল সদস্য রাষ্ট্রের ‘রোহিঙ্গা মুসলিম ও মিয়ানমারের অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক একটি প্রস্তাব জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে পেশ করা হয়। গত ১২ জুলাই জেনেভায় মানবাধিকার পরিষদের ৪৭তম অধিবেশনে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে এ সঙ্কট সমাধানের আহ্বান জানিয়ে প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। অধিবেশনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর যৌন নির্যাতন-গণহত্যাসহ সব ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থার আওতায় আনা এবং তদন্ত প্রক্রিয়া জোরদার করার প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। সর্বোপরি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত-আন্তর্জাতিক আদালতে চলমান বিচার প্রক্রিয়াকেও সমর্থন জানানো হয়। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের মতে, রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের একার কোন সমস্যা নয়। বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হলেও এটি একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা। তাই বিশ্বের সব দেশের উচিত রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারকে বাধ্য করা। মিয়ানমার যেন কোন আন্তর্জাতিক সমর্থন না পায়- এই প্রস্তাব গ্রহণের মাধ্যমে এটা আরও একবার সুস্পষ্ট হলো যে, এটা আন্তর্জাতিক সমস্যা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরই সমাধানের দায়িত্ব নেয়া উচিত।
সমকালীন আফগান উদ্বাস্তু নিয়ে মার্কিন প্রস্তাবনা এবং আফগানিস্তানের সরকার গঠন-নীতিমালা-রাষ্ট্র পরিচালনায় জনগণের সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে বিবেচ্য। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াসহ এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া-কর্মযজ্ঞে তালেবানদের দৃষ্টিভঙ্গি-গতিবিধি-রাষ্ট্রনীতি নিগূঢ় পর্যবেক্ষণের দাবি রাখে। দুর্ভেদ্য কোভিড সংক্রমণের নতুন প্রকরণ এবং প্রাণনিধনের দুর্যোগপূর্ণ প্রেক্ষাপটে রোহিঙ্গা-আফগান উদ্বাস্তু সমস্যার সমাধানে বিবেকপ্রসূত জাতিরাষ্ট্র-বিশ্ব সংস্থাসহ বিশেষ করে জাপান, চীন ও ভারতের ভূমিকা প্রণিধানযোগ্য। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে প্রতিকূল নাজুক পরিবেশ তৈরিতে অশুভ শক্তির প্রভাব বহুলাংশেই সুস্পষ্ট ও অনুভূত। বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে তাদের আত্তীকরণ ও অভিবাসনে উপযোগী অবস্থান এবং ক্ষেত্র নির্মাণে অদৃশ্য রহস্যের মূলে লুকিয়ে থাকা উৎস সমূহের উপলব্ধি বিশ্ববাসীর কাছে অত্যন্ত সুস্পষ্ট। বাণিজ্য-উন্নয়ন-বন্ধুত্বের সম্পর্ককে উজ্জ্বলতর করার সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে রোহিঙ্গা সংকট উত্তরণে প্রতিবেশী ভ্রাতৃপ্রতিম দেশসমূহের ইতিবাচক দায়িত্বশীল কর্মকৌশল অগ্রগণ্য হওয়া উচিত। চীন-মিয়ানমার-ভারত-পাকিস্তানের সমর্থনে ব্যক্তিস্বার্থে স্বকীয় জাতীয় সত্তাকে বিলীন করা কখনও সুস্থ চিন্তা-চেতনার পরিচায়ক হতে পারে না। মুক্তির মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন মাতৃভূমির দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে ধর্মবর্ণ-দলমত নির্বিশেষে মহান মুক্তিযুদ্ধের অবিনাশী ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক চেতনায় উদ্বুব্ধ হয়ে স্বাভাবিক এবং সাবলীল প্রক্রিয়ায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন একান্তভাবেই কাম্য।
ড. ইফতেখার উদ্দীন চৌধুরী
দৈনিক জনকণ্ঠ
লেখক: সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

Tags

Newsletter Signup

Sed ut perspiciatis unde omnis iste natus error sit voluptatem accusantium doloremque.

Post a Comment