লিবিয়ার সেনাশাসক ছিলেন মুয়াম্মর-আল-গাদ্দাফি। তিনি ১৯৬৯ এ সামরিক ক্ষমতা বলে লিবিয়ার রাজা ইদ্রিস আল সেনুসী কে সরিয়ে লিবিয়ার ক্ষমতা দখল করে শাসন করতে থাকেন। ২০১০ সালের আরব বসন্ত নামে আরব দেশসমূহতে আরেমিকান(USA) মদদেএক এক করে দীর্ঘশাসনে থাকা সেনাশাসকগণ ক্ষমতা ছাড়তে থাকে।
আমেরিকার সাথে গাদ্দাফির অনেক পুরনো শত্রুতা ছিল। গাদ্দাফিকে খতমের এক সুবর্ণ সুযোগ হাতে পায় আমেরিকা । আমেরিকা লিবিয়ার গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেবার নামে লিবিয়ার বিক্ষোভকারী সাধারণ ও সেনাবিগ্রেডের কিছু বিদ্রোহী গ্রুপকে অত্যাধুনিক অস্ত্র সরবরাহ করে।
প্রায় ৪২ বছর গাদ্দাফি একনায়কতন্ত্র থেকে দেশের সবাই মুক্তি চাচ্ছিল। তাই লিবিয়ার জনগণ একটু গভীরভাবে চিন্তা না করেই আমেরিকার অস্ত্র হাতে গাদ্দাফির পতনে নিজ দেশে নিজেরাই গৃহযুদ্ধ লাগিয়ে দেয় গাদ্দাফির পতনের জন্য।
অনেক নাটকীয়তার পর গাদ্দাফির মৃত্যুর হয়। কিন্তু দেশে অসংখ্য অস্ত্রের ছড়াছড়ি যা কন্ট্রোলে নিতে লিবিয়ার গাদ্দাফির পরবর্তী সরকার ব্যর্থ হয়। তাই লিবিয়ায় এখনও যুদ্ধ চলমান আছে।
বর্তমান ২০২০ সালের লিবিয়ায় প্রধান দুটি পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ হচ্ছেঃ
কেন যুদ্ধ করছে সেটা বুজার আগে GNA ও LNA সর্ম্পকে জানতে হবে। তাহলেই বুজা যাবে এদের একে অপরের লড়াই করবার কারণ।
★LNA: এই পক্ষটি গঠিত হয়েছে একজন চৌকস সেনা কমান্ডারের মাধ্যমে। তার নাম হল খলিফা হাফতার(Khalifa Haftar)। ইংরেজীতে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম তাকে" Warlord "হিসেবে অভিহিত করে।
হাফতার(Haftar) একসময় গাদ্দাফির সামরিকবাহিনীর একজন সেনাকর্মকর্তা ছিল। গাদ্দাফি তাকে ১৯৮০ সনের দিকে লিবিয়ার প্রতিবেশী দেশ চাদ(Chad) এ আক্রমণের নির্দেশ দেন। কিন্তু ১৯৮৭ সালে হাফতার(Haftar) প্রায় ১০০ জন সেনার সাথে সেখানে আটক হলে গাদ্দাফি তাকে পদচ্যুত করেন এবং হাফতারকে (Haftar) তিনি Chad-এ আক্রমণের নির্দেশের কথা অস্বীকার করেন। [3]
পরবর্তীতে US এর মাধ্যমে হাফতার মুক্তি পায় এবং আমেরিকার ভার্জিনিতে ২০ বছর আশ্রয়ে(asylum) থাকেন।
লিবিয়ায় গাদ্দাফির বিদ্রোহীদের সাহায্যে ও গাদ্দাফি পতনের জন্য তিনি আমেরিকা থেকে লিবিয়ায় ২০১১ সালে প্রত্যাবর্তন করেন।
গাদ্দাফির পতনের পর হাফতার (Haftar) সরকার গঠন করুক এটা আমেরিকা চায়। কারণ এতে লিবিয়ার উপর আমেরিকার প্রভাব বজায় থাকবে।
গাদ্দাফির মৃত্যুর পর দেশ যখন খুব অস্থিতিশীল। কোন শান্তি নেই। তখন হাফতার (Haftar) নিজে একটি বাহিনী গঠন করে(LNA)। যেটি লিবিয়ার পূর্ব অংশে নিজের কর্তৃক স্থাপন করে Tobruk government প্রতিষ্ঠা করে। _
★GNA: GNA মূলত লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপলিতে গঠিত লিবিয়ান সরকার। জাতিসংঘ GNA কে লিবিয়ার বৈধ সরকার বলে মনে করে ও সমর্থন করে। যদিও বর্তমানে ২০২০ সালে লিবিয়ার ৭০% অঞ্চলে এদের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। [4] GNA সরকার প্রধানমন্ত্রী নাম হল ফায়েজ আল সারাজ(Fayez Al-Sarraj)। এই ব্যক্তি ২০১৫ সালের দিকে লিবিয়ার ত্রিপলীর সরকার প্রধান হিসেবে লিবিয়ার ক্ষমতায় আসেন।
যদিও লিবিয়ার বহু অঞ্চলে তখন হাফতার বাহিনীর(LNA) দখলে।
সেনা মার্শাল হাফরের (Haftar) নিজের হাতে গঠিত LNA চায় বাকি যে ৩০% অঞ্চল GNA সরকারের দখলে আছে সেগুলো দখল করে সম্পূর্ণ লিবিয়াতে তার শাসন প্রতিষ্ঠা করতে। আর GNA চায় হাফতারের বাহিনী LNA- কে পরাজিত করতে।
GNA ও LNA একে অপরের সরকারকে স্বীকৃতি দেয় না।
তাই এরা দুই পক্ষই তাদের সহযোগী রাষ্ট্রের সাহায্য নিয়ে লড়াই করে যাচ্ছে।
Post a Comment