News Breaking
Live
wb_sunny

Breaking News

বৈশ্বিক রাজনীতিতে রাশিয়ার পুনরুত্থান (প্রথম পর্ব)

বৈশ্বিক রাজনীতিতে রাশিয়ার পুনরুত্থান (প্রথম পর্ব)

বৈশ্বিক রাজনীতিতে রাশিয়ার পুনরুত্থান (প্রথম পর্ব)




বিংশ শতাব্দীর শেষ দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন বৈশ্বিক রাজনীতিতে নতুন যুগের সূচনা করেছিল যেখানে একদিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে অপেক্ষাকৃত খর্ব শক্তির রাশিয়া ও আরো ১৪ টি নতুন রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়েছিল ও অপরদিকে এককেন্দ্রিক নতুন বিশ্ব ব্যবস্থার নেতা হিসেবে আবির্ভাব ঘটেছিল এমেরিকার।


এরপর প্রায় দুই দশক বিশ্ব রাজনীতির দৃশ্যপট থেকে রাশিয়া নিজেকে অনেকটাই দূরে সরিয়ে রেখেছিল।কারণ সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙনের মাধ্যমে আবির্ভূত রাশিয়া এই সময়জুড়ে মুদ্রাস্ফীতি, বৈদেশিক ঋণ, আইন শৃঙ্খলার অবনতি, অভ্যন্তরীণ সংঘাত, ব্যাপক দুর্নীতি, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাসহ নানামুখী সংকটে জর্জরিত ছিল।


কিন্তু ভৌগলিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্বেও একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকের শেষভাগে এসে রাশিয়া বৈশ্বিক রাজনীতির মঞ্চে নতুন করে নিজের উপস্থিতি জানান দিতে শুরু করে।


২০০৮ সালে জর্জিয়া আক্রমণ থেকে ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখল, ভেনেজুয়েলান মাদুরো সরকারকে সমর্থন কিংবা বাশার সরকারকে টিকিয়ে রাখতে সিরিয়ায় সামরিক উপস্থিতি, এশিয়া, আফ্রিকা, মধ্য প্রাচ্য, ও লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক, কৌশলগত ও সামরিক সম্পর্ক স্থাপন, এবং বর্তমান সময়ে ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার যুদ্ধংদেহী মনোভাব ও কর্মকাণ্ড বিশ্ব রাজনীতির পরিমণ্ডলে রাশিয়ার সক্রিয়তার বার্তা দিচ্ছে।

কিন্তু একবিংশ শতাব্দীর নতুন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কি কারণে রাশিয়া তার রাজনৈতিক পুনরুত্থানের গল্প লিখল?কোন কোন নিয়ামকগুলো এখানে মূল ভূমিকা পালন করল? সেগুলো সম্পর্কে জানা যাক এবার।


প্রথমত, কোন রাষ্ট্রের কৌশলগত ও ভূরাজনৈতিক ওরিয়েন্টেশন সাধারণত তার নেতৃত্বের ওপর নির্ভর করে। গত এক দশক যাবত বিশ্ব রাজনীতির পরিমণ্ডলে রাশিয়ার সক্রিয়তার প্রধান নিয়ামক তার নেতৃত্ব, প্রধানত ভ্লাদিমির পুতিন। কারণ বিগত দুই দশক ধরে রাশিয়ার রাজনীতি আবর্তিত হচ্ছে তাকে ঘিরে। তিনি মনে করেন, রাশিয়ার বিশ্ব রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা উচিত। সেই লক্ষ্যে তিনি জাতীয় নিরাপত্তা নীতি, বৈদেশিক নীতি ও সামরিক মতবাদকে একত্রীকরণের মাধ্যমে রাশিয়াকে তার হারানো মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে বদ্ধপরিকর।
দ্বিতীয়ত,বিংশ শতাব্দীতে রাশিয়ান অর্থডক্স চার্চ তার রাজনীতি নিয়ন্ত্রণের অন্যতম নিয়ামকে পরিণত হয়। পুতিনের রাজনীতি যেহেতু "হলি রাশিয়া ভার্সেস ফরেন এনিমি" দ্বন্দ্বকে পুঁজি করেই সামনে এগিয়েছে, তাই তিনি অর্থডক্স চার্চের নিরঙ্কুশ সমর্থন পেয়েছেন। এর ফলে বিশ্বব্যাপী স্লাভিক ও অর্থডক্স জনগণের রক্ষাকেও মস্কো দায়িত্ব হিসেবে দেখে যার কারণে রাশিয়ার বৈশ্বিক রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে চায়।
তৃতীয়ত,মস্কো মনে করে বিগত দুই দশকে ন্যাটোর এক্সপানশন রাশিয়ার সার্বভৌমত্ব ও ঐতিহ্যকে হুমকির মুখে ফেলেছে।তাই নিজের নিরাপত্তা জোরদারে বিশ্ব রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়াকে রাশিয়া অন্যতম অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চায়।
চতুর্থত,হেজিমন হিসেবে এমেরিকার অবনমন ও ক্ষয়িষ্ণু অবস্থানের ফলে বিশ্ব ব্যবস্থায় যে পাওয়ার ভ্যাকুয়াম তৈরি হয়েছে তা বৈশ্বিক রাজনীতিতে রাশিয়ার সক্রিয় হবার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।
সর্বশেষ, রাশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়ন মূলত তার তেল রপ্তানি ও গ্যাস পাইপলাইন প্রজেক্টের নিরবিচ্ছিন্নতার উপর নির্ভরশীল।তাই বৈশ্বিক ও ইউরোপীয় রাজনীতিতে রাশিয়ার সক্রিয় হবার মাধ্যমে রাশিয়া তার অর্থনৈতিক স্বার্থের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর।

Tags

Newsletter Signup

Sed ut perspiciatis unde omnis iste natus error sit voluptatem accusantium doloremque.

Post a Comment